প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, শুভেচ্ছা নিও। বাংলা প্রথমপত্রে সচরাচর ভালো করার জন্য আমরা যে বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি তা হলো : খাতার সৌন্দর্য রক্ষা, বানানের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ, বাক্যগঠনে তত্ত্ব ভিত্তিক তথ্য উপস্থাপন, অপ্রয়োজনীয় শব্দ বা ভাষা বর্জন, কাটাকাটি যতদূর সম্ভব না করা, অপ্রাসঙ্গিক বিষয় উপস্থাপন থেকে বিরত থাকা, প্রশ্নোত্তরে স্বচ্ছতা , প্রয়োজনীয় মার্জিন বা মার্জিনের জায়গা রাখা। সৃজনশীলের ক্ষেত্রে উদ্দীপক ও পাঠ্য বইয়ের সমন্বয় সাধন, সর্বোপরি নির্ভেজাল তথ্যসমেত গঠনমূলক বিশ্লেষণ তোমার আত্মবিশ্বাসে লেখলেই ভালো করা যাবে।
এখন, আমরা সৃজনশীল প্রশ্নে ভালো করার কিছু কৌশল জানবো :
সৃজনশীল অংশ : মোট প্রশ্ন থাকবে ০৯ উত্তর করতে হবে ০৬ মোট নাম্বার ৬০। গদ্যাংশ থেকে ০৩টি কবিতাংশ থেকে ০৩টি উপন্যাস থেকে ০৩টি । প্রতিটি বিভাগ থেকে ০২টি সহ ০৬টি প্রশ্নের উত্তর করবে। পূর্ণমান ৬০]
সৃজনশীল একটি কৌশলগত প্রক্রিয়া। সৃজনশীল প্রশ্নে পাঠ্য বইয়ের পাঠ সম্পর্কিত অন্য একটি চমত্কার উদ্দীপক থাকে; যাকে দৃশ্যকল্প বা অনুচ্ছেদও বলা হয়ে থাকে। অনুচ্ছেদের মূল ভাবনা থেকেই জ্ঞানভিত্তিক ১০ নাম্বারের চারটি প্রশ্ন সাজানো হবে যেগুলো হলো : (ক) জ্ঞানমূলক (১), (খ) অনুধাবনমূলক (২), (গ) প্রয়োগমূলক (৩) ও (ঘ) উচ্চতর দক্ষতামূলক (৪)। কিন্তু তোমদের জানতে হবে এই ১০ নাম্বারের মধ্যে সৃজনশীল অংশে ১০টি অংশ রয়েছে।
ক. জ্ঞানমূলক অংশ : এ জাতীয় প্রশ্ন স্মৃতি নির্ভর। এখানে পাঠ্যের বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। প্রশ্নে যা দেখা যায় তাহলো : কে, কখন, কোথায়, কী ইত্যাদি।
১ পাঠ্য বই হতে এক কথায় বা এক বাক্যে সঠিক উত্তর দিবে; এখানে কোনো বিষয়ভিত্তিক
বিশ্লে¬ষণের দরকার নেই এখানে তুমি সর্বোচ্চ ০৩ বাক্যের উত্তর করার সুযোগ পাবে।
খ. অনুধাবনমূলক : এখানে কেনো, কী বোঝ, কথাটি ব্যাখ্যা করো, কথাটির অর্থ কী, কী বোঝানো হয়েছে ইত্যাদি ভাষায় প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়। অপ্রাসঙ্গিক কোনো বিষয় আলোচনা না করে সরাসরি উত্তরের মূল উত্তর ও তার ব্যাখ্যা করাই শ্রেয়। এখানে তুমি সর্বোচ্চ ০৫ বাক্যের উত্তর করার সুযোগ পাবে।
গ. প্রয়োগমূলক অংশ : এ স্তর হলো অনুধাবন লব্ধ। বিষয়টি তুমি নতুন পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করতে পারো কি না তার কৌশল বিশেষ। এ জাতীয় প্রশ্নে তুমি তোমার অর্জিত জ্ঞান ও অনুধাবনকে কোনো একটি নিদিষ্ট অবস্থার সাথে সম্পর্কগত আলোচনা করার প্রvয়োগিক ক্ষমতার প্রকাশ ঘটাতে পারো। এখানে তুমি সর্বোচ্চ ১২ বাক্যের উত্তর করার সুযোগ পাবে।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতামূলক : এ স্তরকে বলা হয় বিষয়ভিত্তিক সংশ্লেষণ, বিশ্লেষণ বা মূল্যায়ন করার ক্ষমতা। এ জাতীয় প্রশ্নে তোমাকে চিন্তন দক্ষতার উচ্চতর ভাবনার প্রতিফলন প্রকাশ করতে হবে। এখানে, প্রদত্ত নাম্বার-৪ (১+১+১+১) এখানে তুমি চারটি অংশ বা প্যারা করে লিখতে পারো। অংশগুলো হলো : *উত্তরের শুরুতেই প্রশ্নে চাওয়া মূল উত্তর নির্দেশ করবে *দ্বিতীয় প্যারাতে প্রশ্নমোতাবেক উদ্দীপক ধরে চিন্তন শক্তি ব্যাখ্যা করবে *তৃতীয় প্যারাতে উদ্দীপক ও মূল পাঠ্যের অথবা পাঠ্য ও উদ্দীপকের সম্পর্কগত আলোচনা করবে *চতুর্থ প্যারাতে সার্বিক বিশ্লে¬ষণ করবে সেক্ষেত্রে উদ্দীপক, মূলপাঠ্য বিষয় ও পারিপার্শ্বিক জীবন ব্যবস্থার সাথে মিল রেখে তোমার অনুভূতি প্রকাশ করতে পারো। এখানে প্রশ্নে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সাধারণত বিশ্লে¬ষণ, মূল্যায়ন, আলোচনা, যৌক্তিকতা নিরূপণ বা পাঠ্যের মূল সম্পর্ক ফুটে উঠেছে কি-না তার সত্যতা যাচাই করতে বলা হয়। এটি যেহেতু উচ্চতর দক্ষতামূলক সেক্ষেত্রে নিজের মতো করে বিষয়বস্তু আলোচনা করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে যা হাত ছাড়া করলে নম্বর কম পাবে। এখানে তুমি সর্বোচ্চ ১৫ বাক্যের উত্তর করার সুযোগ পাবে।
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন : মোট প্রশ্ন ৪০ মোট নাম্বার ৪০ সময় ৪০মি. গদ্যাংশ ২৪ কবিতাংশ ১৬ সহপাঠ থেকে কোনো প্রশ্ন করা হবে না।
তোমাদের তিনটি স্তর পার করে তবেই মোট ৪০টি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। মূল বই বারবার পড়ে গুরুত্বপূর্ণ লাইনের নিচে দাগ দিয়ে রাখবে। শব্দার্থ ও টীকা বার বার পড়বে। কবিতা, প্রবন্ধ বা গল্পের মূল বিষয়বস্তু অবশ্যই তোমাকে বের করতে হবে। কবি বা লেখকের জন্মস্থান, জন্ম মৃত্যু সাল, তাঁর রচিত গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনার বা গ্রন্থের নাম মনে রাখবে।
বর্তমান ক্যাটাগরিতে যে তিনটি স্তর তোমাদের পার করতে হবে তাহলো :
(ক) সাধারণ বহুনির্বাচনি অংশ : এ অংশ জ্ঞানভিত্তিক স্মৃতি নির্ভর। এক্ষেত্রে প্রশ্নগুলো কখনো প্রশ্ন আকারে আবার কখনো
অসম্পূর্ণ বাক্য হিসেবে দেওয়া থাকে যা উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে।
(খ) বহুপদী সমাপ্তিসূচক প্রশ্ন : এ ধরনের প্রশ্নে শুরুতে ৩টি তথ্য ভিত্তিক উপস্থাপন থাকে। এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে পরে ৪টি প্রশ্ন তৈরি করা হয়,
(গ) অভিন্ন তথ্যভিত্তিক প্রশ্ন : এখানে একটি উদ্দীপক পাবে, যার মাধ্যমে তোমাকে তথ্য সরবরাহ করা হবে। প্রশ্নগুলোর সাথে একে অপরের মিল দেখতে পাওয়া যাবে।
বাংলা প্রথমপত্র ৩-৪-২০১৪ বৃহস্পতিবার
মোস্তাফিজুর রহমান লিটন সিনিয়র শিক্ষক, বাংলা বীরশ্রেষ্ঠ নূরমোহাম্মদ পাবলিক কলেজ,পিলখানা, ঢাকা
উৎস: প্রথম আলো
No comments:
Post a Comment