পড়ায় মনোযোগ আকর্ষণ ও মানসিক চাপ কমানোর উপায়-শেষ পর্ব - jonakiict school

Latest News

পড়ায় মনোযোগ আকর্ষণ ও মানসিক চাপ কমানোর উপায়-শেষ পর্ব

ছবি: নেট
প্রথম পর্ব ১৬। বিনোদনের ব্যবস্থা করনঃ
শিক্ষা জীবনে শুধু পড়াশোনার মধ্যে থেকে বিনোদনকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। শিক্ষার পাশাপাশি মানসিক চাপ কমানোর জন্য সুস্থ্য বিনোদন অবশ্যই প্রয়োজন। তবে অপসংস্কৃতি ও কুরুটিপূর্ণ দিকগুলো থেকে দূরে থাকাই ভালো। সে সব সাময়িকভাবে ভালো লাগলেও তরুন প্রজন্মের মনে চাপ সৃষ্টি করে কুরুচিপূর্ণ জীবন যাপনে অভ্যস্থ করে, যা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর।
১৭। আড্ডা দেওয়াঃ
অনেক সময় কথায় কথায় বলা হয়ে থাকে ‘বাঙ্গালি কথার রাজা’। বাঙ্গালি কি শুধু বলেই যায় ? তাহলে অন্যরা কী করে?-নিশ্চয় তারা সেই আসরে শোনার কাজটি করে অথবা একটু আধটুতো বলেই কেননা সেতো বোবা নয়। সব মিলিয়ে জমে উঠে উপভোগ্য আড্ডা। আর সেই সাথে মানুষ সাময়িকভাবে ভুলে থাকে দুঃখ কষ্ট। আবার এমনও লোক আছে যারা নিজের মনের কথাগুলো অন্যকে বলতে না পেরে বোবা কান্নায় কাতর হয়ে থাকে। তাদেরতো একটু পেট খালি করা প্রয়োজন। তাই পড়ায় ভালো না লাগলে চুটিয়ে আড্ডা মারো মন ফ্রেশ হলেই আবার লক্ষী ছেলের মতো পড়তে বসে যাও। তবে হ্যাঁ আড্ডাটা যেন বাজে কোনো বিষয় নিয়ে না হয়। একাকিত্বের কারণে একঘেঁয়েমিতায় ভুগে থাকে অনেক শিক্ষার্থী সে ক্ষেত্রে বন্ধু বান্ধব বা আত্মীয় স্বজনদের মাঝে বিরাজ করে সাময়িক মানসিক চাপমুক্ত হতে পারে।
১৮। ধর্মীয়  বই পাঠঃ
ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা সব ধর্মের শিক্ষার্থীরই একান্ত কর্তব্য। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার মধ্যদিয়ে শিক্ষার্থী কলুষমুক্ত জীবন গড়ে তুলতে পারে। তাই শ্রেণির পাঠ্য পুস্তক পাঠের পাশাপাশি ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার প্রয়োজন। ধর্মীয় বই পাঠ করলে মন ফ্রেশ থাকে এবং পড়ার সময় আজে বাজে চিন্তা দূর করে আগ্রহ উদ্দীপনা সৃষ্টি করে মানসিক চাপ কমায়।
১৯। পড়তে ভালো না লাগলে লেখার কাজ করাঃ
দীর্ঘ সময় পড়ার কাজে মনোনিবেশ করার কারণে মানসিক চাপ বেড়ে যায়। মানসিক চাপ নিয়ে বা প্রেসনার মাধ্যমে শিক্ষার্থী দ্রুত পড়া আত্মস্থ করে থাকে ফলে মাথা ব্যাথা অনুভব করে। এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য পড়ার মাঝে মাঝে লেখার কাজগুলো করা যেতে পারে।
২০। মাদক গ্রহণ থেকে বিরত থাকাঃ
মাদক সর্বদা সর্ব ক্ষেত্রেই ক্ষতিকর। বলা হয়ে থাকে ‘যার শুরু আগুন দিয়ে আর শেষ ছাই এ পরিণত হওয়া’। অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষা জীবনে মাদক সেবনে অভ্যস্ত থাকে,ফলে সাময়িকভাবে ভালো লাগা অনুভব করলেও তা প্রকৃতপক্ষে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। মাদক সেবনের ফলে স্বাস্থ্যের নানারূপ ক্ষতি হওয়ার বাস্তবতা জেনেও অনেকে গ্রহণ করতে বাধ্য হয় অভ্যাসের ফলে। তাই যারা মাদক বা নেশা জাতীয় উপকরণ গ্রহণ করে তাদের সঙ্গ পরিহার করা উচিৎ। মাদক গ্রহীতার সঙ্গ পরিহার না করলে শিক্ষার্থী তার কাঙ্খিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। মাদক গ্রহণে অভ্যস্ত হওয়ার ফলে শিক্ষার্থী পড়ার ফাঁকে ফাঁকে তা সেবনের জন্য আসক্ত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে । এক পর্যায়ে শিক্ষার্থী পড়ায় অমনোযোগি হয়ে মানসিক চাপে বিচলিত হবে এবং পড়ায় আগ্রহ হারিয়ে ভিন্নপথ অবলম্বন করতে পারে। তাই প্রত্যেক শিক্ষার্থীরই মাদক সেবন থেকে বিরত থাকা উচিৎ ।
২১। আর্থিক দ্বৈন্যতাঃ
জীবন চলার পথে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা অর্থের প্রয়োজন বোধ করি। বলা হয়ে থাকে ‘অর্থই সকল চালিকা শক্তির মূল’। বাংলাদেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই আর্থিক দ্বৈন্যতায় ভোগে। আর্থিক দ্বৈন্যতা থেকে মুক্ত না হতে পারায় শিক্ষার্থীর বাড়তি মানসিক চাপ তৈরি হয়। তাই ‘আয় বুঝে ব্যায় কর’ প্রবাদটি ভালোভাবে আত্মস্থ করে সামনে অগ্রসর হলে আপেক্ষিক চাহিদার ফলে সৃষ্ট মানসিক চাপ নিরসন হবে।
২২। কোলহল মুক্ত পরিবেশঃ
অনেক শিক্ষার্থীই নির্জন পরিবেশ পছন্দ করে। কিন্তু না চাইতেও অনেক সময় অপ্রীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়ে যায়। এমতাবস্থায় মানসিক চাপের যে সব উৎস আছে সেগুলো খুঁজে বের কর এবং কি উপায়ে সমাধান করা যায় তার চেষ্টা কর। সমাধান একাই সম্ভব না হলে অন্য কারও সাহায্য নিতে পার। অনেক লোকের মাঝে ভালো না লাগলে কোলহল মুক্ত পরিবেশে অবস্থান করাই ভালো।
২৩। অহেতুক বিতর্ক বা বাজিতে না জড়ানোঃ
বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন খেলা বেশ জন প্রিয় হয়ে উঠেছে। সেই সাথে বাজিকরেরাও সমান তালে বাজিমাৎ করতে একটুও পিছিয়ে নেই। এমনকি শিক্ষার্থীদের মাঝেও এ প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়। তাই অহেতুক তর্ক ও বাজি ধরে খেলার মানসিকতা ঝেড়ে ফেলা উচিৎ। এতে অনেক সময় বাড়তি মানসিক চাপ এসে পড়ে। তাই কেউ বাজিতে খেলতে এলে সরাসরি তাকে নাকচ করে দাও। বিশেষ করে যে খেলায় তুমি জান নিজে হেরে যাবে সে খেলায় বাজি ধরবে না। এ ধরনের মানসিকতা পরিহার করলে মানসিক চাপ মুক্ত থাকা যায়।
অন্যরা তোমাকে অনুপ্রাণিত করবে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। তুমিও নিশ্চয় চাইবে প্রতিপক্ষকে হারাতে। আর তখনি শুরু হবে মানসিক চাপ। সে ক্ষেত্রে পরাজয় ঘটলে মানসিক চাপ অনেক সময় স্থায়ী হয়। তাই অযথা মানসিক চাপ নিবে না। কারো প্রতি ঈর্ষা করার অর্থ নিজের বিপদ নিজে ডেকে আনা,যা আগা গোড়াই ক্ষতিকর।
ক্ষেত্র বিশেষে একেকজন একেক ধরনের সমস্যা অনুভব করে থাকে সে ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীর জন্যই সমস্যাগুলো প্রযোজ্য নয়। তবে তোমার ক্ষেত্রে যে সমস্যাটি অনুভব কর তারই সমাধান করতে দু’একটি বিষয় হয়তোবা কাজে লাগতে পারে। কিন্তু এগুলোর কোনটিই যদি তোমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না হয় তবে সহপাঠী বন্ধু,শ্রেণি শিক্ষক,অভিভাবক অথবা ডাক্তারের নিকট থেকে সুপরামর্শ গ্রহণ করতে পার। ইনসাল্লাহ্‌ তোমার সমস্যার সমাধান হবে। কোন সমস্যা চেপে রাখতে নেই তাতে ভবিষ্যতে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।

মো: রেজাউল করিম
বি,এ(অনার্স)এম.এ;বি.এড;এম.এড

jonakiict school Designed by Templateism.com Copyright © 2014

Powered by Blogger.
Published By Gooyaabi Templates